শহীদ সঞ্জয় তলাপাত্র
হীদ সঞ্জয় তলাপাত্র ১৯৭৬ সালের ২২ আগস্ট চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কানাইলাল তলাপাত্র। মা সোভা তলাপাত্র। সঞ্জয় লাপাত্র একমাত্র নিজের ইচ্ছায় ১৯৯৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগে ভর্তি হন পাশাপাশি সমাজ বদলের স্বপ্ন নিয়ে যুক্ত ন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে । ১৯৯৮ এর আগস্টের আগেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গড়ে উঠে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী আন্দোলন। ফলে তিন দিন ক্যাম্পাসে স্টেশনে মিছিল-সমাবেশ অনুষ্ঠিত হত। ২০ গস্ট । সেদিন সকালে বটতলী স্টেশনে মিছিলের কোন কর্মসূচি ছিল না। কিন্তু ট্রেন ছাড়ার গ মুহূর্তে ছাত্র শিবির কর্মীরা বড় লাঠি ও রড দিয়ে হামলা করে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের নেকেই আহত হয় ।
ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে বটতলী স্টেশনে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বের হয় । ক্যাম্পাসের ভেতরেও মিছিল সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত হয়। সেদিনের বর্বর হামলায় ্টেশনের প্লাটফর্মে মৌলবাদী ঘাতকদের দ্বারা চারুকলার ২য় বর্ষের ছাত্র সঞ্জয় তলাপাত্র গুরুতর হত হন । প্রতিদিনের মতো সেদিনও সঞ্জয় খাতা আর তুলির ব্যাগ কাঁধে নিয়ে শাটল ট্রেনে েতে চেয়েছিল তার প্রিয় ক্যাম্পাসে। কিন্তু স্বাধীনতা-বিরোধী চক্রের লাঠি আর রডের আঘাত াঁকে ক্যাম্পাসে পৌছাতে দেয়নি । গুরুতর আহত অবস্থায় ভর্তি হতে হয় হাসপাতালে ।
তারপর ীর্ঘ ৪৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সাথে লড়াই করে ২২ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮টায় অত্যধিক রক্তক্ষরণে থেমে ায় একটি প্রাণবন্ত জীবন । ২২ আগস্ট ছিল সঞ্জয় তলাপাত্রের ২২তম জন্মদিন । ক্যাম্পাসে ঞ্জয়ের মৃত্যুর সংবাদ আসলে ১৪ হাজার ছাত্রছাত্রী ক্ষোভে, ঘৃণায়, প্রতিবাদে রাজপথে নেমে সে আর আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করে বলে- ‘মাগো তোমায় কথা দিলাম, সঞ্জয় হত্যার দলা নেব’ সঞ্জয়ের ক্যাম্পাসে খুনী শিবিরের ঠাঁই নাই’ । কত খণ্ড খণ্ড মিছিল কত দিক থেকে সছিল তার কোন হিসেব ছিল না। কখনো বা মিছিলগুলো একসাথে মিলিত হয়ে, কখনো বা য়েকটি অংশে ভাগ হয়ে খুনিদের এবং তাদের সহকর্মীদের খুঁজতে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মন উত্তাল অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন দিনের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করে। ঞ্জয়ের মৃত্যু সেদিন সকলকে ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস শিখিয়েছিল। দীর্ঘ ১২ বছরের ছাত্র শিবিরের বরুদ্ধ ক্যাম্পাসকে সেদিন মুক্ত করার শক্তি যোগায় সঞ্জয়ের আত্মত্যাগ । ১৪ হাজার ছাত্রছাত্রীর ম্মিলিত প্রতিবাদে প্রতিরোধে সঞ্জয়ের হত্যাকারী ঘাতকরা সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পালিয়ে েতে বাধ্য হয়।
সঞ্জয় তলাপাত্র একটি অসাম্প্রদায়িক, সন্ত্রাসমুক্ত, শোষণমুক্ত সমাজ গড়তে েয়েছিল। চেয়েছিল দখলদারিত্বমুক্ত সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাসে স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে। কিন্তু াঁর এই চাওয়া ঘাতকদের সহ্য হয়নি। তারা ভয় পেয়েছিল সঞ্জয়ের স্বপ্নকে, আদর্শকে । ৌলবাদী চক্রের ধারণা ছিল সঞ্জয় তলাপাত্রকে মারতে পারলে তাঁর আদর্শ ও স্বপ্ন শেষ হয়ে াবে। কিন্তু তাদের ধারণা ছিল ভুল। সঞ্জয়ের মৃত্যুই এর জ্বলন্ত প্রমাণ। সঞ্জয়ের চেতনায় সেদিন র্জে উঠেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন ছাত্রছাত্রী। মুক্ত করেছিল দীর্ঘ একযুগের অবরুদ্ধ িশ্ববিদ্যালয়কে । শহীদ সঞ্জয় তলাপাত্র সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সংগ্রামের সূর্য সেনানী ।