শহীদ প্রোটন কুমার দাশগুপ্ত

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অগ্রসেনানী শহীদ প্রোটন দাশগুপ্ত ১৯৭৩ সালের ২২ মার্চ হবিগঞ্জ জেলার লাখাই উপজেলার স্বজন গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ডা. সুভাষ দাশগুপ্ত মুক্তিযুদ্ধে কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ ও ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত গেরিলা বাহিনীর একজন মুক্তিযোদ্ধা। মা রেনুবালা দাশগুপ্ত। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে প্রোটন দ্বিতীয়। লাখাই ১নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রোটন প্রাইমারি বৃত্তি লাভ করেন।

১৯৮৮ সালে মাধবপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৯১ সালে সিলেট সরকারি বাণিজ্যিক কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করেন। ১৯৯১-১৯৯২ সেশনে ঢাকা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হন। ছোট বেলা থেকে শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন লালন করার কারণে ঢাকায় ছাত্র ইউনিয়নের কাজের সাথে সম্পৃক্ত হন। ১৯৯৬ সালে প্রোটন সংগঠনের জাতীয় পরিষদ সদস্য হন। প্রোটন ছাত্র ইউনিয়ন লাখাই উপজেলার আঞ্চলিক শাখার সহ-সভাপতি ছিলেন। ১৯৯৬ সালে মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে লাখাই উপজেলার দুর্নীতিবাজ লোকদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। সেই সময়ে ছাত্র ইউনিয়ন নেতা প্রোটন দুর্নীতিবাজ লোকদের কাছে ‘শত্রু’ হিসেবে চিহ্নিত হয়। এর প্রেক্ষিতে ১৯৯৬ সালের ১৪ জুন হবিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা প্রোটনের উপর হামলা চালায়।

হামলার পরবর্তীতে গুরুতর আহত অবস্থায় আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে রাতে সাড়ে ১১টায় ২৬ বছরের ছাত্রনেতা প্রোটন মৃত্যুবরণ করেন। প্রোটনের মৃত্যুতে স্থানীয় ক্ষুদ্ধ ছাত্র জনতা বিক্ষোভে তাঁর হত্যার প্রতিবাদ জানায়। প্রোটন হত্যার মামলায় প্রধান আসামী লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ ৯ জনের মধ্যে ৭জন গুরুত্বপূর্ণ নেতা কর্মীর নাম থাকায় আসামীরা ২০০৪ সালে বেকসুর খালাস পায় হবিগঞ্জ আদালত থেকে । প্রোটন হত্যার বিচার হয়নি। প্রোটন শোষণহীন সমাজের স্বপ্ন দেখতো তাই নিজেকে যুক্ত করেছে ছাত্র ইউনিয়নের পতাকা তলে । শহীদ প্রোটন দাশগুপ্ত ছাত্র ইউনিয়নের সূর্যসন্তান ।