শহীদ নুরুল ইসলাম

শহীদ নুরুল ইসলাম ১৯৬৯ সালে রাজশাহী সিটি কলেজের একাদশ শ্রেণীর বাণিজ্য শাখার ছাত্র। পাশাপাশি শোষণমুক্ত সমাজের স্বপ্নে যুক্ত হন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নে। সে সময় আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে বিক্ষুব্ধ উত্তাল সমগ্র দেশ। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা প্রত্যাহার ও বঙ্গবন্ধুর মুক্তি। ২১ ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি সহ ৬ দফা ও ১১ দফা আন্দোলনের প্রতিবাদী নাম ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম খোকা ।

আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী সার্জেন্ট জহুরুল হক কে ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে বন্দি অবস্থায় হত্যা করে বলা হয় তিনি পালানোর চেষ্টা করেছিলেন । পাক হানাদারের এই কূটকৌশলে ছাত্র জনতা বিভ্রান্ত না হয়ে হত্যার প্রতিবাদে সমগ্র দেশে ১৬ ফেব্রুয়ারি হরতাল পালন করে। সারা দেশের মতো রাজশাহী জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ধর্মঘট পালিত হয় । পাশাপাশি বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে নেমে আসে রাজপথে। শাসক গোষ্ঠী ভীত হয়ে রাজশাহীতে ১৪৪ ধারা জারি করে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নেয় ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল শহরের দিকে যাবে। শহরেও শুরু হয় কারফিউ ভাঙ্গার প্রস্তুতি । ১৮ ফেব্রুয়ারি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ছাত্রদের মিছিল শুরু হলে পাক সেনারা মিছিলে গুলিবর্ষণ করে। মিছিলে পাকসেনাদের গুলিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রক্টর ড. সামসুজ্জোহাকে প্রাণ দিতে হয়। একজন শিক্ষকের এভাবে মৃত্যুর ঘটনায় ফুঁসে ওঠে শহরবাসী।

এই সময় পাক সেনারা শিক্ষকদের গ্রেফতার করে খোলা আর্মি ট্রাকে তৎকালীন পৌরসভা ভবনের ক্যাম্পে নিয়ে আসে। শহরের মোড়ে মোড়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্র নেতারা ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। সে সময় ছাত্রনেতা নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিল পৌরসভা ভবনের কাছাকাছি আসতে থাকলে পৌরসভা ভবনে অবস্থানরত ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস ইপিআর এর জোওয়ানদের গুলিতে নগরীর সোনাদিঘীর মোড়ে শহীদ হন মিছিলের অগ্রভাগে থাকা ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম ।