শহীদ মতিউল ইসলাম

মতিউল ইসলাম ১৯৫১ সালে জন্য বাহাদুরপুর (বাগমারা) গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। গাইবান্ধা সরকারি কলেজ থেকে আই. এ পাশ করার পর ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে উচ্চতর ডিগ্রী অর্জনে ভর্তি হন। ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধে পিতা उকালীন পাদেশিক সদস মোসলেমউদ্দি এবং চাচাত ভাই খবিরুজ্জামানের (মুক্তিযুদ্ধে শহীদ, বীর বিক্রম খেতাবপ্রাপ্ত) সাথে ২ নং সেক্টরে (কুমিল্লা অঞ্চলে) বীরত্বের সাথে লড়াই করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ১৪৮নং কক্ষের বাসিন্দা ছিলেন মতিউল ইসলাম। শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার আত্মোৎসর্গকারী এ বীরযোদ্ধা বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জহুরুল হক হল শাখার প্রচার সম্পাদক ছিলেন। সম্রাজ্যবাদবিরোধী বিশ্ব নির্মাণে বদ্ধপরিকর মতিউল ভিয়েতনামে মার্কিন আগ্রাসনের বিপক্ষে ছাত্র ইউনিয়নের মিছিলে সামনের কাতারের সৈনিক ছিলেন। নাপাম বোমায় নিশ্চিহ্ন মাইলাই গ্রামের ৫০০ নারী- পুরুষ হত্যা, উত্তর ভিয়েতনামের বিপ্লবী সরকারের স্বীকৃতিদান এবং সাম্রাজ্যবাদের নিপাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ ছাত্র ইউনিয়ন ১৯৭৩ সালের ১ জানুয়ারি ডাকসু সহযোগে প্রতিবাদ মিছিল বের করে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু হওয়া মিছিলের লক্ষ্য ছিল মার্কিন তথ্যকেন্দ্র (ইউসিস) ভবন, মতিউল ছিলেন মিছিলের সামনের সারিতে। ভিয়েতনামের জনগণের বিরোচিত সংগ্রামে সংহতি প্রকাশের মিছিলে পুলিশ একপর্যায়ে গুলি চালায়। শহীদ হন মতিউল ইসলাম এবং মীর্জা কাদের। গুলি মতিউলের গলা ভেদ করে চলে যায়। প্রতিবাদে পরদিন ঢাকাসহ সারাদেশে পূর্ণদিবস হরতাল পালিত হয়। বাংলাদেশ সরকার ভিয়েতনামের বিপ্লবী সরকারের প্রতি সংহতি জ্ঞাপন করে । ঢাকা থেকে ইউসিস ভবন প্রত্যাহার করা হয়।

মতিউল-কাদেরের রক্তে বাংলাদেশ- ভিয়েতনামের জনগণের সংহতি বন্ধুত্বে পরিণত হয়। ২০০০ সালে ভিয়েতনাম সরকার মতিউল ইসলামকে ভিয়েতনামের জাতীয় বীর’ ঘোষণা করে। মতিউলের কন্ঠ আজো থামেনি। দেশে দেশে সাম্রাজ্যবাদের হত্যা-ধ্বংস-নির্যাতনের প্রতিবাদে আজো মতিউলের সংগঠন ছাত্র ইউনিয়ন সোচ্চার । মতিউল- 1-কাদেরের রক্তে সাম্রাজ্যবাদের পতন অনিবার্য হয়ে উঠছে। লাল সালাম শহীদ মতিউল । তোমার রক্ত পতাকা হাতে আমরা চুলি অবিরাম।