
ছাত্র ইউনিয়নের গণতহবিলে সহায়তা করুন
করোনার সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে আছে বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষরা। কিন্তু করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যপণ্য গুলো তাদের নাগালের বাইরে। অন্যদিকে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে স্যানিটাইজার, মাস্কের বাজারে অপ্রাপ্যতা ও দুই থেকে তিন গুণ দাম বৃদ্ধি দেখা দিয়েছে।
তাই বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন তার সাত দশকের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছাত্র ইউনিয়নের সমাজকল্যাণ সেলের উদ্যোগে শ্রমজীবী মানুষ ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে হ্যান্ড স্যানিটাইজার সরবারহ করা হবে।
স্যানিটাইজার তৈরীতে বিপুল পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন। এই অর্থ উত্তোলনে ছাত্র ইউনিয়ন গণতহবিল সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছে। নিম্নোক্ত বিকাশ, রকেট, নগদ ও ব্যাংক একাউন্টটিতে আর্থিক সহয়তা প্রদান করে দুস্থ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ান।
কেন্দ্রীয় রেসপন্স সেন্টার
টিএসসি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
করোনা প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন
বিশ্ববিদ্যালয়-স্কুল-কলেজ বন্ধ। হল ভ্যাকেন্ট। মেসবাড়ী গুলোতে কেউ নেই৷ যেকোনো সময়ে লকড ডাউন হতে চলা ঢাকা শহর থেকে মানুষ যে যেভাবে পারে বের হয়ে যাচ্ছে। শ্রমজীবীদের এই মহাসঙ্কটময় নগরী থেকে এখনই বের হয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
মহামারী করোনা কিংবা তারচেয়ে ভয়ংকর কিছু এলেও দু’বেলা ভাত নিশ্চিত করতে খেটে চলতেই হবে, এই বোধের বাইরে তারা কিছু ভাবতেও পারছে না। করোনার সবচেয়ে ঝুঁকিতে এরাই আছে।
এদের জন্য সরকার, রাষ্ট্র, বড় বড় নিগমবদ্ধ সামাজিক কর্তব্য পালন করা প্রতিষ্ঠান যখন কিছু করছে না, তখন এই শ্রমজীবী মানুষদের জন্য রাত-দিন খেটে যাচ্ছে একদল তরুণ। যাদের এখন এই সময়ে এখানে থাকার কথা ছিল না। তাদের সহপাঠীরা, অন্যান্য সামাজিক-রাজনৈতিক সংগঠনের কেউই যখন দৃশ্যপটে নাই তখন সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে এই তরুণরা।
একদিকে দিন-রাত চলছে স্বাস্থ্যপণ্য হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরীর কাজ। অন্যদিকে কাঁচামাল আর তহবিল সংগ্রহ। অন্য একটি দল উৎপাদিত স্যানিটাইজার আর সচেতনামূলক বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে সাভার, আশুলিয়া, কামরাঙ্গীরচর, যাত্রাবাড়ীর শ্রমিক অধুষ্যিত এলাকা গুলোয়। যারা ফেসবুকে বা টেলিভিশনে এই মহামারী রোগ আর তার প্রতিরোধের উপায় সম্পর্কে জানতে পারে না তাদের কাছে যাচ্ছে এরা। বলছে, কিভাবে টিকে থাকা যাবে।
ফরিদপুরের যৌনপল্লী থেকে কক্সবাজারের সমুদ্রসৈকত সারাদেশে সর্বত্রই সীমিত শক্তির সর্বোচ্চ প্রয়োগ করছে এরা। ঢাকার বাইরে ময়মনসিংহ, গৌরিপুর, সিলেট, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামে চলছে স্যানিটাইজার আর সচেতনামূলক প্রচারাভিযান।
পরিস্থিতিই হাজারো জমায়েতের মিছিল মিটিং এর বাস্তবতা রাখে না। তাই বছরের পর বছর যারা ভাড়াটে বা ক্ষমতার জোরে হাজারো মানু্ষ নিয়ে পেশীর দাপট দেখিয়েছে তারা আজ একজনও রাস্তায় নেই৷ যারা গুটিকয়েক সব সময়েই মানুষের পাশে ছিলো তারাই এখনো আছে৷ লড়ে যাচ্ছে মানুষের জন্য।
দেশের প্রতিটা ক্রান্তিকালে, সংকটময় পরিস্থিতিতে সবার আগে ঝাঁপিয়ে পড়েছে এরা। একাত্তরের ফেব্রুয়ারী থেকে এরা প্রস্তুতি নিয়েছিলো সর্বাত্মক যুদ্ধের৷ একাত্তরের বীর গেরিলাদের উত্তরসূরীরা ১৯৮৮-৯৮ এর বন্যায় আধডুবো নৌকায় করে স্যালাইন পৌঁছে দিয়েছে বন্যার্ত মানুষের কাছে। আটা, রুটির বস্তা মাথায় মাইলের পর মাইল হেঁটে খাদ্য পৌঁছে দিয়েছে অভুক্তদের কাছে।
এই সূর্যসন্তানদের চিনে রাখুন। সময়ের সাহসী যোদ্ধাদের চিনে রাখুন।
জয়তু ছাত্র ইউনিয়ন! প্রাণে প্রাণ মেলাবোই, বলে রাখি৷